সত্যেন্দ্র নাথ বসুর জীবনী| Satyendra Nath Bose Biography.
নাম (Name): | সত্যেন্দ্রনাথ বসু (Satyendra nath Bose) |
জন্ম (Birthday): | ১ লা জানয়ারি ১৮৯৪ (1St January 1994) |
জন্মস্থান (Birthplace): | কলকাতা, ভারত |
অভিভাবক (Parents)/ পিতা ও মাতা: | সুরেন্দ্রনাথ বসু (বাবা)
আমোদিনী বসু (মা) |
দাম্পত্য সঙ্গী (Spouse): | উষাবতী বসু |
জাতীয়তা : | ভারতীয় |
কর্মক্ষেত্র: | পদার্থ বিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠান : | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়(বাংলাদেশ) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ |
শিক্ষা: | হিন্দু স্কুল |
পরিচিতির কারণ: | বোস-আইনস্টাইন ঘনীভবন বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান বসু-আইনস্টাইন বন্টন বসু-আইনস্টাইন অনুবন্ধ বোসন গ্যাস বোসন আদর্শ বসু সমীকরণ ফোটন গ্যাস |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার: | পদ্মবিভূষণ
ফেলো অফ দ্য রয়েল সোসাইটি |
মৃত্যু (Death): | ৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪ (4th February 1994) |
সত্যেন্দ্র নাথ বসুর জীবনী| Satyendra Nath Bose Biography.
সত্যেন্দ্র নাথ বসুর জন্ম : ১ লা জানয়ারি ১৮৯৪। জন্মস্থান: কলকাতা, ভারত। পিতা ও মাতা: সুরেন্দ্রনাথ বসু (বাবা) আমোদিনী বসু।দাম্পত্য সঙ্গী: উষাবতী বসু।
সত্যেন্দ্র নাথ বসুর জন্ম ও শৈশব:
» জন্ম ও শৈশব: ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি উত্তর কলকাতার গােয়াবাগানের ২২ নম্বর ঈশ্বর মিত্র লেনে (স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের পাশে) বিজ্ঞানাচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু জন্মগ্রহণ করেন। তাদের আদি নিবাস ছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বড়াে জাগুলিয়ায়। সত্যেন্দ্রনাথের পিতা সুরেন্দ্রনাথ বসু ছিলেন রেল কোম্পানির হিসাবরক্ষক এবং মাতা আমােদিনী দেবী ছিলেন আলিপুরের বিখ্যাত উকিল মতিলাল রায়চৌধুরির কন্যা। সত্যেন্দ্রনাথ ছিলেন পিতামাতার জ্যেষ্ঠ সন্তান এবং তাদের সাত সন্তানের মধ্যে একমাত্র পুত্রসন্তান।
সত্যেন্দ্র নাথ বসুর শিক্ষাজীবন:
»শিক্ষাজীবন: ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পঞ্চম, ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আইএসসি পরীক্ষায় প্রথম, ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ওই কলেজ থেকেই বিএসসি (গণিত অনার্স) পরীক্ষায় প্রথম এবং ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি (মিশ্র গণিত)-তেও প্রথম হন সত্যেন্দ্রনাথ। ছাত্রজীবনে লেখাপড়া ছাড়াও খেলাধুলাে, সাহিত্য, সংগীত প্রভৃতি বিষয়েও তিনি আগ্রহী ছিলেন। স্বাদেশিকতা এবং জাতীয়তাবাদেও তিনি উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠেছিলেন।
সত্যেন্দ্র নাথ বসুর কর্মজীবন:
»কর্মজীবন: এমএসসি পাশ করেই তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শাখা রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজে মিশ্রগণিত এবং পদার্থবিদ্যার শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। কয়েকবছর এখানেই শিক্ষকতা ও গবেষণায় আত্মনিয়ােগ করার পর ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে নবপ্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
পদার্থবিদ্যার রিডার হিসেবে যােগদান করেন। এখানে অধ্যাপনাকালেই ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে তার বিখ্যাত গবেষণাপত্র ‘বােস সংখ্যায়ন’ (Bose Statistics) বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন দ্বারা প্রশংসিত ও জার্মান ভাষায় অনূদিত হয়ে একটি বিজ্ঞান-পত্রিকায় (জার্মানির) প্রকাশিত হলে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি লাভ করেন।
১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে বৃত্তি নিয়ে তিনি ইউরােপে যান। সেখানে আইনস্টাইন, সিলভা লেভি, হাইজেনবার্গ, মাদাম কুরি প্রমুখ বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানীর সঙ্গে মত-বিনিময় এবং গবেষণা করার সুযােগ পান। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ফিরে এসে তিনি পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যােগদান করেন। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে পদার্থবিদ্যা শাখার সভাপতি এবং ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে মূল সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে সত্যেন্দ্রনাথ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরূপে যােগদান করেন। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত খয়রা অধ্যাপক পদে এবং পরে স্নাতকোত্তর বিজ্ঞান বিভাগের ডিন পদে অধিষ্ঠিত হন।
সত্যেন্দ্র নাথ বসুর ব্যক্তিজীবন ও সমাজসেবা:
» ব্যক্তিজীবন ও সমাজসেবা: সত্যেন্দ্রনাথ ভালাে বেহালা ওএস্রাজ বাজাতে পারতেন। এমএসসি পড়ার সময় ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর বিয়ে হয় শ্রীমতি উষাবতী দেবীর সঙ্গে। পরাধীন। ভারতবর্ষের বিপ্লবীদের তিনি নানাভাবে সাহায্য করে দেশের। স্বাধীনতা সংগ্রামে সমর্থন জুগিয়েছেন। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময়। তিনি ছুটে গিয়েছেন ত্রাণকার্যে, রােগার্ত সতীর্থের সেবা করেছেন। নিজের হাতে, দুঃথকে সাহায্য করতে ব্যাংকে ওভারড্রাফট কেটেছেন। তাঁর চরিত্রের এইসব মানবিক গুণাবলির কথা যে সাধারণ দেশবাসী বিশেষ জানে না, তার জন্য তার প্রচারবিমুখ নির্লিপ্ততাই দায়ী।
সত্যেন্দ্র নাথ বসুর বিজ্ঞানমনস্ক সাহিত্যকর্ম:
»বিজ্ঞানমনস্ক সাহিত্যকর্ম: মূলত বিজ্ঞানী হলেও সত্যেন্দ্রনাথের মনে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ধারা এবং বিশেষভাবে মানবিকতার ধারাটি সর্বদা বহমান ছিল। রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘বিশ্বপরিচয়’ বিজ্ঞানগ্রন্থটি সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, দেশের উন্নতির জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান-শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটানাে প্রয়ােজন এবং এই কাজটি মাতৃভাষার মাধ্যমেই সবচেয়ে ভালােভাবে করা সম্ভব।
তার নিজের কথায়—“যাঁরা বলেন বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান হয় না, তারা হয় বাংলা জানেন না, নয় বিজ্ঞান বােঝেন না। বাঙালি জনসাধারণকে বিজ্ঞানসচেতন ও বিজ্ঞানমনস্ক করার উদ্দেশ্যে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় তিনি বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং তার মুখপত্ররূপে মাসিক পত্রিকা ‘জ্ঞান ও বিজ্ঞান প্রকাশ করেন।এই দেশপ্রেমিক বাঙালি বিজ্ঞানী সবুজ পত্র’ ও ‘পরিচয়’ সাহিত্যপত্রিকা-গােষ্ঠীর অন্যতম সদস্য ছিলেন।
সত্যেন্দ্র নাথ বসুর সম্মান ও স্বীকৃতি:
» সম্মান ও স্বীকৃতি: চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পরই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে এমিরিটাস প্রােফেসর’ পদে নির্বাচিত করে। অবশ্য এসময়েই তিনি বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদ লাভ করেন। তিন বছর সেই পদে থাকার পর ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে
ভারত সরকার তাঁকে পদার্থবিদ্যার জাতীয় অধ্যাপকরূপে নিযুক্ত করে, আমৃত্যু তিনি ওই পদেই আসীন ছিলেন।বিশ্বভারতী তাঁকে ‘দেশিকোত্তম’ এবং ভারত সরকার ‘পদ্মবিভূষণ’ উপাধি দ্বারা সম্মানিত করেছেন। সত্যেন্দ্রনাথ ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনের রয়্যাল সােসাইটির ফেললা নির্বাচিত হন। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ থেকে কিছুকাল তিনি রাজ্যসভার মনােনীত সদস্যও ছিলেন। তা ছাড়া, ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন বিজ্ঞান সম্মেলনে অথবা বিশ্বশান্তি সম্মেলনে যােগ দিতে তিনি বহুবার বিদেশে গেছেন। বিজ্ঞানীর জীবনাবসান হয়। কিন্তু আজও তার নাম সমগ্র পৃথিবীর
» জীবনাবসান: ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের ৪ ফেব্রুয়ারি এই মহান। বিজ্ঞানী মহলে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারিত হয়।
If you have any doubts or questions, please let me know.... যদি আপনার কোনও সন্দেহ বা প্রশ্ন থাকে তবে দয়া করে আমাকে জানান.....