Type Here to Get Search Results !

মুর্শিদাবাদের সেরা 25টি দর্শনীয় স্থান | Murshidabad Tourist Spot.

মুর্শিদাবাদের সেরা 25টি দর্শনীয় স্থান | Murshidabad Tourist Spot.



Table of Contents(toc)

মুর্শিদাবাদের সেরা 25টি দর্শনীয় স্থান | Murshidabad| Tourist Spot.

মুর্শিদাবাদের সেরা 25টি দর্শনীয় স্থান গুলি হলো ১.হাজারদুয়ারী ২.ইমামবাড়া ৩.বাচ্চোয়ালি কামান ৪. ওয়াসেফ মঞ্জিল ৫.কাঠগােলা বাগান, ৬. জগৎশেঠের বাড়...

আজ আমাদের আলোচনার বিষয় হলো মুর্শিদাবাদের সেরা 25টি দর্শনীয় স্থান নিয়ে |Murshidabad Tourist Spot. এই দর্শনীয় স্থান গুলি কোথায় এবং একে অপরের থেকে কত দূরে অবস্থিত। মুর্শিদাবাদের সেরা 25টি দর্শনীয় স্থান গুলি

মুর্শিদাবাদের সেরা 25টি দর্শনীয় স্থান নিয়ে |Murshidabad| Tourist Spot. 

আজ আমাদের আলোচনার বিষয় হলো মুর্শিদাবাদের সেরা 25টি দর্শনীয় স্থান নিয়ে |Murshidabad Tourist Spot. এই দর্শনীয় স্থান গুলি কোথায় এবং একে অপরের থেকে কত দূরে অবস্থিত। মুর্শিদাবাদের সেরা 25টি দর্শনীয় স্থান গুলি হলো- ১.হাজারদুয়ারী, ২.ইমামবাড়া, ৩.বাচ্চোয়ালি কামান, ৪. ওয়াসেফ মঞ্জিল, .কাঠগােলা বাগান, ৬. জগৎশেঠের বাড়ি, ৭. নসিপুর রাজবাড়ি, ৮. নসিপুর আখড়া, ৯. জাফরাগঞ্জ দেওড়ী, ১০. জাফরাগঞ্জ মােকবারা, ১১. আজিমুন্নেসা বেগমের সমাধি, ১২. নবাব বাহাদুর স্কুল, ১৩. ত্রিপােলিয়া তােরণ, ১৪. চক মসজিদ, ১৫. ফৌতি, ১৬. মসজিদ, ১৭. কাটরা মসজিদ,১৮. জাহানকোষা কামান, ১৯.রাধামাধব মন্দির, ২০. মােতিঝিল, ২১. সিরাজের সমাধি, ২২. রােশনিবাগ, ২৩. জগবন্ধু ধাম, ২৪. কিরীটেশ্বরী মন্দির, ২৫. বড়নগর।

মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারি|Murshidabad| Tourist Spot.

মুর্শিদাবাদের প্রধান আকর্ষনীয় দ্রষ্টব্য হাজারদুয়ারী। নবাব হুমায়ুন জা ১৮২৯ সালের ৯ আগস্ট এই প্রাসাদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ডানকান ম্যাকলিয়ড প্রাসাদের স্থপতি। নির্মাণ খরচ সাড়ে ষােল লক্ষ টাকা। প্রাসাদের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ-উচ্চতা যথাক্রমে ৪১৫ ফুট, ২০৫ ফুট ৯০ ফুট। প্রাসাদে সহস্রাধিক জানালা দরজা থাকার জন্যে নাম হয় হাজারদুয়ারি। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ ১৯৮৫ সালে এই প্রাসাদটি অধিগ্রহণ করে।বর্তমানে এই প্রাসাদের নাম হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়াম। একতলায় অস্ত্রাগারে রয়েছে সিরাজ ও আলিবর্দীর তরবারি; মীরকাশিমের জুলফিকার, নাদিরশাহের মােচাকৃর্তি বল্লম, গণ্ডারের চামড়ার ঢাল, শিরস্থাণ, নানা রকম বন্দুক, কামান, চাকু, পিস্তল, খঞ্জর প্রভৃতি। 

দোতলার আর্ট গ্যালারীতে আছে রূপরসিংহাসন, পানপাত্র, হাতির দাঁতের শােফাসেট,পালকি, চীনামাটি, পিতল ও কাঁচের ফুলদানি, বিলিয়ার্ড বাের্ড মার্বেলের মুর্তি মমি করা দুষ্পপ্য পাখী। নবাবের পােষাক, নবাব ব্যবহৃত আসবাব ও বাসনপত্র। রাফেল, টিসিয়ান, মার্শাল ভ্যানডিউক,হার্ডসান, হ্যারিস ও দেশীয় শিল্পী জেএ রায় গিরিজাশঙ্করের আঁকা বেশ কিছু তৈলচিত্র। লাইব্রেরীতে রয়েছে উর্দু ফারসি ইংরাজী ভাষায় লেখা প্রায় ১২০০০ দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ। আর্কাইভ গ্যালারীতে আছেআবুল ফজলের আইন-ই-আকবরীর পাণ্ডুলিপি। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত, হাজারদুয়ারি খােলা থাকে। ১৫ বছরের নীচে বালক-বালিকাদের প্রবেশমূল্য লাগেনা। প্রতি শুক্রবার বন্ধ।

মুর্শিদাবাদের ইমামবাড়া|Murshidabad| Tourist Spot.

নবাব ফেরাদুন জা ১৮৪৭ সালে এই ইমামবাড়া তৈরী করান। নির্মাণ খরচ ছয় লক্ষ টাকা।এটি বাংলার বৃহত্তম ইমামবাড়া। এর ভিতর রয়েছে এক মদিনা। মদিনার ভিতর ইমামের পদচিহ্ন, ধর্মপুস্তক, মক্কামদিনার ছবি আছে। বাঁদিকের দালানে রয়েছে। আলমপাঞ্জা, পতাকাদণ্ড তাজিয়া হাসান হােসেনের পরিবারের সদস্যদের প্রতীকি সামগ্রী।যামহারমের সময় দশদিন সাধারণের জন্যে প্রদর্শিত হয়।

মুর্শিদাবাদের বাচ্চোয়ালি কামান|Murshidabad| Tourist Spot.

হাজারদুয়ারি ও ইমামবাড়ার মাঝখানে আঠোরাে ফুট লম্বা আনুমানিক ৭২৫০ কিলাে গ্রাম ওজনের একটি কামান রয়েছে। সপ্তদশ শতকের কোনাে এক সময় কামানটি নির্মিত হয়। জনশ্রুতি কামানের আওয়াজের তীব্রতার জন্য কাছাকাছি লােকালয়ের অনেক মহিলার গর্ভপাত হয়ে যায়। সেইজন্য নাম বাচ্চোয়ালি কামান।

মুর্শিদাবাদের ওয়াসেফ মঞ্জিল| Murshidabad| Tourist Spot.

মুর্শিদাবাদের শেষ ঐতিহাসিক স্থাপত্য ওয়াসেফ আলি মীর্জর নির্মিত ওয়াসেফ মঞ্জিল হাজারদুয়ারির দক্ষিণদিকে দুশােমিটার দূরে অবস্থিত। প্রাসাদে ওঠার জন্য রয়েছে শ্বেতপাথরের সিঁড়ি।নবাব ব্যবহৃত আসবাব ও ব্রুডাস নামকএক পাথরের এক পুরুষমুর্তি এখানে আছে।

মুর্শিদাবাদের কাঠগােলার বাগান| Murshidabad| Tourist Spot.

হাজারদুয়ারি থেকে চার কিমি উত্তরে কাঠগােলা বাগান। মার্বেল ও পঙ্কের কাজে সমৃদ্ধ এক আদিনাথ মন্দির রয়েছে। মন্দিরের ভিতর বুদ্ধগয়ার পরেশনাথ পাহাড়, ফ্লগু নদী, যানবাহন ও পালকি সমেত মার্বেল পাথর কেটে কেটে করা মানচিত্রের মডেলটি অসাধারণ। প্রাসাদবর্তমানে সংগ্রহশালা। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতালক্ষ্মীপৎদুগর ও জগৎপৎ দুগর। এখানে বাগানে প্রচুর মূর্তি মাছের সমাধি ও ঘােড়ার চড়া দুগর পরিবারের চার ভায়ের মূর্তি রয়েছে। এই বাগানে সিনেমার সুটিং হয়েছে প্রচুর এখনও হয়। বাগানটি দেখতে ৪০ মিনিট সময় লাগে; বন্ধের কোনােদিন নেই।

মুর্শিদাবাদের জগৎশেঠের বাড়ি| Murshidabad| Tourist Spot.

গােপালচাদ শেঠ এখানে বাড়ি ও একটি মন্দির নির্মাণ করেন উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে। এই বাড়ি বর্তমানে সংগ্রহশালা। সকাল ৬টা থেকে রাত্রি ৮টা পর্যন্ত খােলা। বন্ধের কোনাে দিন নেই।

মুর্শিদাবাদের নসিপুর রাজবাড়ি| Murshidabad| Tourist Spot.

দেবী সিংহের উত্তরপুরুষ কীর্তিাদ এই রাজবাড়ি নির্মাণ করেন হাজারদুয়ারির আদলে। এখানে রয়েছে দশাবতারের মূর্তি। মন্দিরে জাফরির কাজ উল্লেখযোেগ্য। বর্তমানে এই রাজবাড়ি সংস্কার করে দোতালা খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য।

মুর্শিদাবাদের নসিপুর আখড়া:

রামানুজ সম্প্রদায়ের সাধুদের আখড়া। আখড়ার রথযাত্রা ও ঝুলন উৎসব প্রায় ২৫০ বছরের পুরাতন। রথযাত্রার প্রধান আকর্ষণ কাঠ, পিতলও চাদির রথ। রথযাত্রা ও ঝুলন পূর্ণিমায় এখানে মেলাবসে।

মুর্শিদাবাদের জাফরাগঞ্জ দেওড়ী:

হাজারদুয়ারি থেকে আড়াই কিমি উত্তরে জাফরাগঞ্জ প্রাসাদ। আলিবর্দীর বৈমাত্ৰীয় বােন শাহখানমের সঙ্গে মীরজাফর বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হওয়ার পর এখানে বাস করতেন। মীরনের নির্দেশে এই প্রাসাদের কোনে এককক্ষে সিরাজকে হত্যা করা হয়।

মুর্শিদাবাদের জাফরাগঞ্জ মােকবারা:

জাফরাগঞ্জ প্রাসাদের উল্টো দিকে শাহখানমের ‘কিচেন গার্ডেন’ ছিল। বেগমের প্রিয় এই বাগানটি পরে সমাধিক্ষেত্রে পরিণত হয়। মীরজাফর সহ তার বংশের সহস্রাধিক সমাধি রয়েছে এই সমাধিক্ষেত্রে।

মুর্শিদাবাদের আজিমুন্নেসা বেগমের সমাধি:

হাজারদুয়ারি থেকে প্রায় দুই কিমি উত্তরে মুর্শিদকুলি খাঁর একমাত্র কন্যা আজিমুন্নেসা বা জিন্নতউন্নেশা বেগমের সমাধি।বাবা ও মার মত সমাধিমসজিদে ওঠার সিঁড়ির নীচে। এখানে ছিল এক মসজিদ। ভূমিকম্পে মসজিদটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। শুধু একটিমাত্র প্রবেশদ্বার থেকে গেছে। আজিমুন্নেসা ছিলেন বিচক্ষণ বুদ্ধিমতী বেগম।

মুর্শিদাবাদের নবাব বাহাদুর স্কুল:

মুন্নিবেগম তৈরি করেছিলেন মােবারকউদৌল্লার বাসভবন মােবারক মহল। ১৮২৫ সালে নিজামত পরিবারের ছেলেদের জন্য এখানে স্কুল ও কলেজ চালু হয়। এটাই মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রথম কলেজ। কলেজ পরে বন্ধ হয়ে যায়। হাজারদুয়ারির স্থপতি ডানকান ম্যাকলিয়ড ১৮৩৮-৪৩ সালে বর্তমান স্থাপত্য নির্মাণ করান। নবাব বাহাদুর ইনস্টিটিউশন,এটা এখন মুর্শিদাবাদ জেলার একমাত্র সরকারি বিদ্যালয়।

মুর্শিদাবাদের ত্রিপােলিয়া তােরণ:

হাজারদুয়ারির দক্ষিণ-পূর্বে চক বাজারে একটি নহবতখানাসহ তােরণ নবাব সুজাউদ্দিন নির্মাণ করেন। তােরণটি নীচে তিনটে রাস্তা। এই তােরণটিকে ত্রিপােলিয়া গেট বলে।

মুর্শিদাবাদের চক মসজিদ:

ত্রিপােলিয়া গেটেরদক্ষিণ পশ্চিমে পারস্য স্থাপত্যরীতির শ্বেতশুভ্রনয়নাভিরাম এক সৌধ দেখা যায় এটাই চক মসজিদ।১৭৬৭ সালে মীরজাফরের মহিষীমুন্নিবেগম নির্মাণ করান সাতগম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদেরয়েছে অপরূপ পঙ্কের কাজ।

মুর্শিদাবাদের ফৌতি মসজিদ:

চক মসজিদের এক কিমি পূর্বে নবাব সরফরাজ নির্মিত একটি অসম্পূর্ণ মসজিদরয়েছে। আলিবদীর সঙ্গে ১৭৪০ সালে গিরিয়ার যুদ্ধে নবাব মারা যান। তখন থেকে এই ফৌতি মসজিদটি অসম্পূর্ণ পড়ে আছে।

মুর্শিদাবাদের কাটরা মসজিদ:

হাজারদুয়ারি থেকে দুই কিমি পূর্বে পারস্য স্থাপত্য রীতির অনুকরণে মুর্শিদকুলি খাঁর নির্দেশে মােরাদ ফরাস এক বছরে এই কাটরা মসজিদ নির্মাণ করেন ১৭২৩ সালে। চৌদ্দটি সিড়ির নীচে মুর্শিদকুলির সমাধি। পাঁচ গম্বুজ ও চার মিনার বিশিষ্ট মসজিদে তিনটি গম্বুজ ও দুটি মিনার ভূমিকম্পে ধূলিসাৎ হয়ে যায়। মসজিদের চারপাশে রয়েছে। অনেক চতুষ্কোন প্রকোষ্ট। এগুলি দুরের তীর্থযাত্রী ও কোরান পাঠার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল। মসজিদের বর্তমান প্রবেশপথটি আসলে পশ্চাত দিক।মিনার দুটির ভিতর রয়েছে। ৬৭টি সর্পিল ধাপের সিঁড়ি।

মুর্শিদাবাদের জাহানকোষা কামান:

কাটরা মসজিদের এক কিমি দক্ষিণপূর্বে তােপখানায় একটি বেদীর উপর সতের ফুট লম্বা এক কামান আছে, নাম জাহানকোষা।কামানের গায়ে নয়টি পিতলের খণ্ডে ফারসি ভাষায় লেখা আছে কামানটির জন্ম ইতিহাস। শাহজাহানের রাজত্বকালে ইসলাম খাঁর সুবাদারির সময় দারােগা শের মহম্মদের অধীনে হরবল্লভ দাসের তত্ত্বাবধানে জনার্দন কর্মকার টাকায় ১৬৩৭ সালে কামানটি নির্মাণ করেন।

মুর্শিদাবাদের রাধামাধব মন্দির।Radhamadhab Mandir.

তােপখানা থেকে দেড় কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে কুমাের পাড়ায় ৪০০ বছরের বেশি পুরাতন রাধামাধব মন্দির। ১৬০৯ সালে বংশীবদন গােস্বামী বৃন্দাবন থেকে কষ্টিপাথরের রাধামাধবের বিগ্রহ এনে এখানকার মাধবী কুঞ্জে প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত রাধামাধবের বিগ্রহ ও বাইরে মাধবীলতা গাছটি সমসাময়িক স্থানযাত্রার প্রতিবছর এখানে উৎসব হয়।সবুজ গাছ-গাছালিতে ঘেরা রাধামাধব মন্দিরশান্তনির্জন দুষণমুক্ত নির্মল পরিবেশসকল মানুষকে আকর্ষিত করে।

মুর্শিদাবাদের মােতিঝিল:

ঘেসেটি বেগম মােতিঝিলের সিংঘীদালান প্রাসাদে বাস করতেন। ঢাকার নবাব নওয়াজিস মহম্মদ তার বেগমকে এখানে একটি প্রাসাদ ও একটি মসজিদ বানিয়ে দেন। অশ্বখুড়াকৃতি ঝিল দ্বারা প্রাসাদটি সুরক্ষিত ছিল। এই ঝিলে নবাবি আমলে মুক্তর চাষ হতাে, তাই এর নাম মােতিঝিল। বর্তমানে প্রাসাদ ধ্বংস হয়ে গেছে। কালা মসজিদ আর অশ্বখুড়াকৃতির বিশাল ঝিলটি ঐতিহাসিক স্মৃতি বহন করে চলেছে।

মুর্শিদাবাদের সিরাজের সমাধি:

লালবাগ সদরঘাট পার হয়ে দুই কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে আছে এক সমাধিক্ষেত্র নবাব আলিবর্দী তার মায়ের মৃত্যুর পর এখানে এই সমাধি ভবনটি নির্মাণ করেন। পূর্বে এই সমাধিভবন সুগন্ধি নানা ফুলগাছ দিয়ে সাজানাে ছিল। খুসবু বাগ’ থেকে বর্তমানে জায়গাটি নাম খােসবাগ হয়ে গেছে। আলিবর্দী সিরাজদৌল্লা, লুৎফান্নেসা সহ তাদের পরিবারের অনেক সদস্যের সমাধি রয়েছে এখানে।

মুর্শিদাবাদের রােশনিবাগ:

নবাব সুজাউদ্দিনের আমােদ-প্রমােদের প্রিয় স্থান। হাজারদুয়ারি প্রাসাদের বিপরীতে ভাগীরথীর পশ্চিমপাড়ে অতি মনােরম এক বাগানবাড়ি তৈরি করান। দেশি-বিদেশি ফুল ফলের গাছ, ফোয়ারা ও আলাে দিয়ে এত সুন্দর করে সাজানাে ছিল। যে সেই জন্য জায়গাটির নাম রােশনিবাগ হয়ে গেছে। বর্তমানে এখানে আছে। সুজাউদ্দিনের সমাধি। উত্তর দিকে যে মসজিদ রয়েছে সেটি নবাব আলিবর্দীর নির্মিত ১৭৪৫ সালে।

মুর্শিদাবাদের জগবন্ধু ধাম:

রােশনিবাগ থেকে দুই কিমি উত্তরে ১১৮ ফুট উঁচু এক সুদৃশ মন্দির দেখা যায়। এইখানে প্রভু জগবন্ধুর জন্ম হয়। বৈশাখ মাসের পূর্ণিমায় এখানে উৎসব হয় ও মেলা বসে।এটা মুর্শিদাবাদ জেলার সর্বোচ্চ মন্দির।

কিরীটেশ্বরী মন্দির।Murshidabad kiriteswari mandir.

কিরীটেশ্বরী মন্দির হল হিন্দুধর্মের শাক্ত মতের পবিত্র তীর্থ শক্তিপীঠগুলির অন্যতম। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগ কোর্ট রোড রেলওয়ে স্টেশনের ৩ মাইল দূরে 'কিরীটকণা' (বা 'কিরীটকোণা') গ্রামে অবস্থিত। রাঢ় বাংলার প্রাচীন পীঠস্থানগুলির মধ্যে কিরীটকণা অন্যতম; যদিও বর্তমান মন্দিরটি বেশি পুরানো নয়। এই মন্দিরের নিকটে একাধিক মন্দির আছে। তান্ত্রিকমতে, এখানে দেবী দাক্ষায়ণী সতীর 'কিরীট' অর্থাৎ মুকুটের কণা পতিত হয়েছিল। যেহেতু এখানে দেবীর কোনও অঙ্গ পতিত হয়নি, তাই এই স্থানকে অনেক তন্ত্রবিদ্ 'পূর্ণ পীঠস্থান' না বলে 'উপপীঠ' বলে থাকেন। এই পীঠে দেবী 'বিমলা' এবং তার ভৈরব 'সম্বর্ত' নামে পূজিত হন।


জগৎবন্ধু ধাম থেকে চার কিমি পশ্চিমে জেলার প্রাচীনতম দেবস্থান কিরীটেশ্বরী মন্দির।সতীর কিরীট পড়ে এখানে তাই উপপীঠহিসাবে চিহ্নিত হয়।নবাবি আমলে এই মন্দিরের গৌরব ও মর্যাদা পূর্ণ বিকশিত হয়। রাণিভবানির তৈরি মন্দির ও নানান সময় বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের পৃষ্ট পােযকতার এখানে বহু মন্দির হয়। পৌষ মাসের শনি মঙ্গলবার মেলা বসে এখানে।


মুর্শিদাবাদের বড়নগর।Baranagar.

বড়নগর (বরানগর বা বটনগর নামেও পরিচিত) হল পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার আজিমগঞ্জের দুই মাইল উত্তরে ভাগীরথী গঙ্গাতীরে অবস্থিত একটি প্রাচীন শহর, নাটোরের রাণী ভবানীর স্মৃতি ও কীর্তির সঙ্গে জড়িত। এখানকার দেবালয়গুলি পশ্চিমবঙ্গের দেবালয়ের মধ্যে প্রাচীনতা ও আকার-গড়নের দিক থেকে বিশেষ আকর্ষণীয়।

কিরীটেশ্বরী মন্দির থেকে আঠারাে কিমি উত্তরে বড়নগর। অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি থেকে রানিভবানি স্থায়ীভাবে এখানে বসবাস শুরু করেন। সেই সময় তিনি এখানে ভবানিশ্বর, গঙ্গেশ্বর, রাজরাজেশ্বরী চারবাংলা মন্দির সহ আরাে অনেক মন্দির নির্মাণ করান। মন্দিরের আধিক্যের জন্য জায়গাটি বাংলার বারাণসী’ নামে খ্যাত হয়। চারবাংলা ও গঙ্গেশ্বর, জোরবাংলা মন্দিরের টেরাকোটার কাজে সমৃদ্ধ। রামরাবণের যুদ্ধ, দুর্গা, কালী, রাধাকৃষ্ণ, পালকি, শােভাযাত্রা নানান সামাজিক চিত্র ছােট ছােট ইটের উপর রূপায়িত।চারবাংলা মন্দিরের পূর্ব দিকের মন্দির পঙ্কের অপরূপ কাজে সমৃদ্ধ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.