Type Here to Get Search Results !

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী| Netaji Subhas Chandra Bose Biography.

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী| Netaji Subhas Chandra Bose Biography.
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী| Netaji Subhas Chandra Bose Biography.  

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী| Netaji Subhas Chandra Bose Biography.  

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী ও রচনা| Netaji Subhas Chandra Bose Biography. সুভাষচন্দ্রের জন্ম হয়েছিল ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে জানুয়ারি, ওড়িশার কটক শহরে। র‍্যাভেনশ’ কলিজিয়েট স্কুলে তাঁর ছাত্রজীবনের শুরু। ছাত্র হিসাবে তিনি ছিলেন অসাধারণ মেধাবী। ছাত্রজীবনে নিতান্ত অল্প বয়স থেকেই তিনি সমাজসেবার কাজে নিজেকে নিয়োগ করেন। 

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু জীবনী বাংলা pdf| নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ছদ্মনাম কি ছিলনেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মস্থান কোথায়নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু রহস্যনেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর রচনা বাংলায়নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাবার নাম কি?  

রচনা সংকেত: সর্বত্যাগী দেশপ্রেমিক – জন্ম, শিক্ষা ও কর্মজীবন – স্বদেশের জন্য দীক্ষা—স্বদেশি আন্দোলন—দেশত্যাগ—ইউরোপ থেকে জাপান—আজাদ হিন্দ ফৌজ— দুর্ঘটনা—ভারতের স্বাধীনতা—অমর নেতাজি। দেশপ্রেমে'র যদি কোনো সার্থক নাম থাকে, সেই নাম হল ‘সুভাষচন্দ্র'।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সংক্ষিপ্ত জীবনী| Netaji Subhas Chandra Bose short  Biography.  


নাম (Name) নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji Subhash Chandra Bose)
জন্ম (Birthday) ২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ (23rd January 1897)
জন্মস্থান (Birthplace) কটক, ওড়িশা, ভারত
Parents/ পিতা ও মাতা জনকীনাথ বসু (পিতা)

প্রভাবতী দত্ত (মাতা)

জাতীয়তা ভারতীয়
রাজনৈতিক দল ফরওয়ার্ড ব্লক
অন্যান্য রাজনৈতিক দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
দাম্পত্য সঙ্গী (Spouse) এমিলি শেঙ্কল
সন্তান অনিতা বসু পাফ
শিক্ষা/ Educatin ব্যাপটিস্ট মিশন’স প্রোটেস্ট্যান্ট ইউরোপীয় স্কুল, কটক, ১৯০২–০৯, র‍্যাভেনশো কলেজিয়েট স্কুল, কটক, ১৯০৯–১২, প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা, ১৯১২–১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯১৬, স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা, ২০ জুলাই ১৯১৭–১৯১৯, ফিটজউইলিয়াম হল, নন-কলেজিয়েট স্টুডেন্টস বোর্ড, কেমব্রিজ, ১৯১৯-২২,
পরিচিতির কারণ ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী

আজাদ হিন্দ ফৌজের সংগঠক ও সর্বাধিনায়ক

মৃত্যু (Death) অমীমাংসিত (তবে,দেশপ্রেমিকের কখনো মৃতু হয়না।)

সর্বত্যাগী দেশপ্রেমিক সুভাষচন্দ্র:

ভারতবর্ষের ইতিহাস থেকে খুঁজে খুঁজে নানা ধরনের ত্যাগের উদাহরণ আমরা সংকলিত করতে পারি, কিন্তু কেবল দেশের জন্য আত্মোৎসর্গ, সর্বস্ব ত্যাগ তাঁর মতো  এভাবে কে করেছে? পরাধীনতার যন্ত্রণার এমন জ্বালা সুভাষচন্দ্র ছাড়া আর কে অমনভাবে বহন করেছে? ইতিহাসে এ-দৃষ্টান্ত বিরল। সুভাষচন্দ্র তাই ভারতবাসীর কাছে নিছক একজন দেশপ্রেমী নেতা নন, তিনি হলেন, ‘নেতাজি’।

সুভাষচন্দ্রের জন্ম, শিক্ষা ও কর্মজীবন:

সুভাষচন্দ্রের জন্ম হয়েছিল ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে জানুয়ারি, ওড়িশার কটক শহরে। র‍্যাভেনশ’ কলিজিয়েট স্কুলে তাঁর ছাত্রজীবনের শুরু। ছাত্র হিসাবে তিনি ছিলেন অসাধারণ মেধাবী। ছাত্রজীবনে নিতান্ত অল্প বয়স থেকেই তিনি সমাজসেবার কাজে নিজেকে নিয়োগ করেন। 

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর পিতামাতা/ Netaji Subhash Chandra Bose Parents :  

বাবা জানকীনাথ বসু ও মা প্রভাবতী দেবী। বাবা জানকীনাথের বাসভূমি ছিল চব্বিশ পরগণার কোদালিয়া গ্রামে। অভাব – অনটনের মধ্যেই বড় হয়ে ওঠেন জানকীনাথ । পরে কটক শহরে গিয়ে আইন ব্যবসা শুরু করলেন। কয়েক বছরের মধ্যেই নিজের যোগ্যতায় কটকের সবচেয়ে খ্যাতিমান উকিল হয়ে ওঠেন। পরিশেষে সরকারী উকিলের পদ লাভ করেন। তিনি ছিলেন সৎ দৃঢ়চেতা মানুষ। স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে মতান্তর হওয়ায় সরকারী উকিলের লোভনীয় পদকে তিনি হেলায় ত্যাগ করেন। কিন্তু উকিল হিসাবে আইনের মধ্যেই তিনি তাঁর প্রতিভা ও কর্মশক্তিকে আবদ্ধ করে রেখে জনসাধারণের কল্যাণকর্মের সংশ্লিষ্ট নানা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও নিজেকে জড়িত করেন। বিভিন্ন জনহিতকর কর্মের জন্য সমগ্র ওড়িশায় বিখ্যাত হয়ে উঠেছিলেন।  
 
  • বিভিন্ন গঠনমূলক কাজের জন্য জানকীনাথ ইংরাজ সরকারের কাছ থেকে রায়বাহাদুর খেতাবে সম্মানিত হয়েছিলেন।  
  •  দেশে আইন অমান্য আন্দোলনের সময় সরকারের দমন নীতির প্রতিবাদে জানকীনাথ সরকারের দেওয়া রায় বাহাদুর খেতাব বর্জন করে লাঞ্ছিত দেশভক্তদের শ্রদ্ধা অর্জন করেন।
  •  প্রভাবতী দেবীও ছিলেন স্বামীর মতই আত্মসচেতন মহিলা। সকল ব্যাপারেই তাঁর আত্মমর্যাদাজ্ঞান ও তেজস্বিতা সকলের মনে সম্ভ্রমের উদ্রেক করত। প্রতিবেশী ও অন্যান্য সকল শ্রেণীর মানুষের দুঃখ দুর্দিনে হৃদয়ভরা সহানুভূতি ও দয়া এই দম্পতির মধ্যে প্রকাশ পেত। 

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর শৈশবকাল / Netaji Subhash Chandra Bose Childhood : 

ছোটোবেলায় সুভাষ ছিলেন তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন । সবসময় মা বাবাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করতেন বিশ্বজগৎ সম্পর্কে জানার আগ্রহ ছিল আকাশচুম্বী। পরিবারের অন্যান্যদের মতো তাঁকে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য কটকের প্রোটেস্ট্যান্ট ইওরোপীয়ান স্কুলে ভরতিকরা হয়েছিল। স্কুলটি ব্রিটিশ ধারায় পরিচালিত এইজন্য দেশি স্কুলগুলিতে পাঠরত সঙ্গীদের তুলনায় সুভাষচন্দ্র ইংরাজি ঘেঁষা শিক্ষায় এগিয়ে ছিলেন। এই ধরনের স্কুলে পড়ার সাথে সাথে অতিরিক্ত কিছু বৈশিষ্ট্য লাভ করানো হয় । 

সুভাষ হয়ে উঠলেন নিয়মানুবর্তিতার প্রতীক। সঠিক আচার ব্যবহার শিখলেন কাজে পরিচ্ছন্নতা এল তা সত্ত্বেও সাহেবী স্কুলের পরিবেশ তার ভাল লাগতো না। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে , এখানে তাকে একটা কৃত্রিম জগতের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। স্কুলের চার দেওয়ালের বাইরে বিশাল ভারতবর্ষ পড়ে আছে। সেই ভারতের অধিকাংশ মানুষ নিরক্ষর নিরন্ন তাদের কথা সবচেয়ে আগে চিন্তা করতে হবে। এল ১৯০৯ সাল সুভাষ তখন বারো বছরের এক বালক। ইওরোপীয়ান মিশনারী স্কুল ছাড়ার সময় হয়েছে এই খবরে সুভাষ অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছিলেন। 

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর কলেজ জীবন/ Netaji Subhash Chandra Bose College Life:  

বিবেকানন্দ ছিলেন তাঁর কাছে এক আদর্শ পুরুষ। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণের জন্য ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে। এই কলেজে পড়বার সময় ভারত-বিদ্বেষী অধ্যাপক ওটেনের সঙ্গে তাঁর  সংঘর্ষ  হয়। এই সংঘর্ষের জন্য তাঁকে শাস্তিও পেতে হয়। বাধ্য হন তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ ত্যাগ করতে। পরে স্কটিশচার্চ কলেজ থেকে দর্শনে প্রথম শ্রেণির অনার্স নিয়ে বি. এ. পাস করেন। এরপর তিনি বিলাতে যান এবং মাত্র ছ'মাসের প্রস্তুতি নিয়ে আই. সি. এস. পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অধিকার করে সগৌরবে উত্তীর্ণ হন। ইংরেজিতে তিনি ইংরেজ প্রতিযোগিদের পরাজিত করে প্রথম হন। সেকালে আই. সি. এস.–এর মত বড়ো চাকরি এদেশে আর ছিল না। একে বলা হত ‘স্বর্গীয়’ চাকরি। 

  • ১৯১৩ খ্রিঃ র্যাভেনশ কলেজিয়েট স্কুল থেকেই সুভাষচন্দ্র প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে বৃত্তিলাভ করলেন। শেষ পর্যন্ত ঠিক করা হল উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁকে ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী কলকাতায় পাঠানো হবে।    
  • এটা সুভাষের জীবনের এক ঐতিহাসিক সমাপতন। কলকাতায় না এলে তিনি পরবর্তীকালে বিশ্বের এক প্রধান রাজনৈতিক নেতৃত্বের আসনে উপবিষ্ট হতে পারতেন না।
  •  কলকাতায় সুভাষের ভাগ্যে কী লেখা ছিল , পরিবারের আপনজনেরা বোধহয় আগে থেকে তা অনুধাবন করতে পারেন নি। মফসল শহর থেকে কলকাতা পারিপার্শ্বিকতার ক্ষেত্রে বিরাট পরিবর্তন। সাধারণত এই পরিবর্তনের ফল ভালোই হয়। সুভাষ কলকাতায় এসে বুঝতে পারলেন যে , এখানকার জগত অত্যন্ত জটিল , অথচ সম্ভাবনাপূর্ণ।   
  • নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji Subhash Chandra Bose) ভরতি হলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা কলেজ প্রেসিডেন্সি কলেজে। সেখানে বেশ কিছু ছাত্রের সঙ্গে দেখা হল। যাদের মনে দেশপ্রেমের আগুন জ্বলছে। 

সুভাষচন্দ্রের স্বদেশের জন্য দীক্ষা: 

স্বদেশপ্রেম ও পরাধীনতার জ্বালা সুভাষের চিত্তে তখন এতই তীব্র যে তিনি সেরা চাকুরিটি হাতের মুঠোয় পেয়েও ইংরেজদের ‘গোলামি’বর্জন করবার সিদ্ধান্ত নিলেন। ইংল্যান্ডের থেকে  জাহাজ এসে যখন বোম্বাইয়ে পৌঁছুল, তিনি জাহাজ থেকে নামলেন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েই। ইংরেজের গোলামি করতে হবে বলে তিনি আই. সি. এস.-এর নিয়োগপত্র কুচিয়ে ছিঁড়ে ফেলে দিলেন। সেদিনের তারিখ ছিল ১৬ জুলাই, ১৯২১ খ্রিস্টাব্দ। তিনি সোজা গিয়ে হাজির হলেন গান্ধিজির কাছে এবং দেশের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করার প্রস্তাব দিলেন। গান্ধিজি তাঁকে সাদরে গ্রহণ করলেন এবং দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের কাছে থেকে কাজ করতে উপদেশ দিলেন। বলা বাহুল্য, সেদিন থেকেই সুভাষচন্দ্র স্বাধীনতা আন্দোলনে নেমে পড়লেন।

স্বদেশি আন্দোলনে সুভাষচন্দ্র বসু:

জ্বলন্ত একটি গোলার মতো তিনি ইংরেজ শাসকদের কাছে পরে ভীতির কারণ হয়ে উঠলেন। প্রতিটি স্বদেশী আন্দোলনের সামনে তাঁকে দেখা গেল। 'অসহযোগ আন্দোলন’ থেকে ‘ইংরাজ ভারত-ছাড়ো ’আন্দোলনের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি সর্বত্র নেতৃত্ব দিতে থাকলেন। বাংলাদেশ তখন সবিশেষ সক্রিয় ছিল সহিংস বিপ্লববাদ, সেই বিপ্লবীরাও বিশেষভাবে আশ্রয় খুঁজে পেলেন সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বের ভেতর। ইংরেজ শাসক আতঙ্কিত হয়ে তাঁকে কারারুদ্ধ করল। স্বদেশ সেবায় এইভাবেই অভিষেক শুরু হল তাঁর। 
১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে সর্বসম্মতিক্রমে তিনি কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হলেন। পরের বছরে তিনি মহাত্মা গান্ধির অসহযোগিতা সত্ত্বেও আবার কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হলেন। পরিণামে, মহাত্মা গান্ধি ও তাঁর সহযোগী নেতাদের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দিল। বলা বাহুল্য, স্বাধীনতা ও তার উপায় এবং পথ নিয়েই ছিল দু’জনের মত-স্বাতন্ত্র্য। ইতিমধ্যে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ বেধে গেল। সুভাষচন্দ্র পুনরায় বন্দি হলেন। স্বাস্থ্যের কারণে ইংরেজ শাসককুল তাঁকে তাঁর এলগিন রোডের বাড়িতে অন্তরিন করে রাখল। ১৯৪১ সালের ১৭ জানুয়ারি ওই বাড়ি থেকে সুভাষ ছদ্মবেশে গোপনে উধাও হয়ে গেলেন। ইতিহাসে এ এক নাটকীয় ঘটনা ঘটল। এ ধরনের ঘটনা ভারত ইতিহাসে বিরল। 

ইউরোপ থেকে জাপানে সুভাষচন্দ্র বসু:

সুভাষচন্দ্রের জীবনে এর পরবর্তী অংশ রহস্য-রোমাঞ থেকেও আকর্ষণীয়। উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের সংকীর্ণ গিরিপথ দিয়ে তিনি ছদ্মবেশে পৌঁছলেন আফগানিস্তানে। সেখান থেকে জার্মানি। জার্মানিতে কিছুদিন থাকলেন এবং দেখা করলেন হিটলারের সঙ্গে। এখানে তাঁর উদ্দেশ্য  ইউরোপ থেকে  সফল হল না দেখে, হাজার হাজার মাইল পথ তিনি ডুবোজাহাজে করে পাড়ি দিয়ে চলে এলেন  জাপানে। রাসবিহারী বসুর আনুকূল্যে ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’-এর নেতৃত্ব পেলেন সুভাষ। এবং এই সৈন্য নিয়ে মুক্তিবাহিনী তৈরি করে এগিয়ে এলেন তিনি ভারতের পথে। ইংরেজ সৈন্যদের পরাভূত করে ইম্ফল ও কোহিমায় তিনি স্বাধীন ভারতের পতাকা ওড়ালেন। মুক্ত করলেন আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।সুভাষচন্দ্র ছিলেন ‘আজাদ হিন্দ এর চোখের মণি। তিনি সকলের প্রিয়জন, আদরের ‘নেতাজি'। তাঁর একটিমাত্র শ্লোগান ছিল, ‘জয় হিন্দ' অর্থাৎ স্বাধীন ভারতের জয়।

দুর্ঘটনা দেশপ্রেমিক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু:

১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে জাপানের শোচনীয় পরাজয় ঘটল। নীরবে নিঃশর্তে আত্মসমর্পণ করল জাপান। জাপানের এই আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত আত্মসমর্পণ সবিশেষ সংকটের সৃষ্টি করল সুভাষচন্দ্রের কাছে। এবং তিনি সঙ্গে সঙ্গে নিরুপায় হয়ে আত্মগোপন করলেন। এর পর কোথায় যেন তিনি হারিয়ে গেলেন। তাঁকে আর পাওয়া গেল না। গভীর রহস্য ঘিরে রইল তাঁকে নিয়ে। তাঁর মৃত্যুর কথা কোনো কোনো মহল থেকে প্রচারিত হলেও, কোনো ভারতবাসীই তাঁর মৃত্যুকে বিশ্বাস করে না। আজও না।

ভারতের স্বাধীনতায় সুভাষচন্দ্র বসু:

এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতের অবস্থা একেবারেই বদলে গেল। দেখা দিল ভারত জুড়ে বিশাল  জনজাগরণ। সুভাষচন্দ্রের ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ, এবং তাঁর সামরিক আয়োজনের খবর ইংরেজরা আড়াল করে রেখেছিল। এসব খবর যখন পুরোপুরি ভারতবাসীদের গোচরে এল,তখন আসমুদ্র হিমাচল উদ্বেলিত হয়ে উঠল নেতাজি সুভাষচন্দ্রের নামে। সকলের মুখে মুখে শোনা যেতে থাকল, ‘জয় হিন্দ’ বাণী। —শাসক ইংরেজ এ অবস্থায় হয়ে উঠল ভীতসন্ত্রস্ত। নৌবাহিনীতে দেখা দিল বিদ্রোহ। পথে পথে বের হতে থাকল বড়ো বড়ো শোভাযাত্রা। মিছিল। সারা ভারতবর্ষ জুড়ে চলল এক প্রলয় কাণ্ড। প্রতিবাদ আর প্রতিবাদ। এইসব কাণ্ড দেখে ইংরেজ ‘ভারত ছাড়া’র সিদ্ধান্ত নিল। এবং আমাদের ভারতবর্ষ হঠাৎ স্বাধীন হল।

অমর দেশপ্রেমিক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর:

নেতাজি কিন্তু আর ঘিরে ফিরে এলেন না। তাঁকে ঘিরে ঘনীভূত হতে থাকল নানা রহস্য —কেউ বলে তিনি মারা গেছেন, কেউ বলে, না। এই সংশয় ও বিতর্কের ভেতর না গিয়েও আমরা যা বলতে পারি, তা হল, তিনি জন্ম-মৃত্যুর ঊর্ধ্বে, তিনি অমর। তিনি চিরতারুণ্যের প্রতীক। পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, যাঁর জন্মদিন আছে, অথচ মৃত্যুদিন নেই। দেশপ্রেম যেমন অমর, তিনিও ঠিক তাই। সুভাষচন্দ্রের মতন মানুষ পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। — তাঁর মতো আর দেশপ্রেমিক কে আছে? গান্ধিজির ভাষায় বলতে হয়, তিনি হলেন দেশপ্রেমিকের ভেতর রাজপুত্র— ‘প্রিন্স অ্যামং পেট্রিয়টস'।—তাঁর সঙ্গে কী কারও তুলনা চলে?

 এভাবেই সুভাষচন্দ্র আমাদের মনের মণিকোঠায় চির উজ্জ্বল হয়ে বেঁচে আছেন । শেষ জীবনটি রহস্যাবৃত অবস্থায় কেটে গেছে বলেই বোধহয় নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji Subhash Chandra Bose) হয়ে উঠেছেন কিংবদন্তির মহানায়ক ।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী (প্রশ্ন ও উত্তর) – Netaji Subhash Chandra Bose (FAQ): 


***নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু কবে জন্মগ্রহণ করেন? 
Ans: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু জন্মগ্রহণ করেন ১৮৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি।  

***নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর স্ত্রীর নাম কী ? 
Ans: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর স্ত্রীর নাম এমিলি সেঙ্কল।

***নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর পিতার নাম কী ? 
Ans: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর পিতার নাম জনকীনাথ বসু ।  

***নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মায়ের নাম কী ? 
Ans: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মায়ের নাম প্রভাবতী দত্ত। 

***নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর সন্তানের নাম কী ? 
Ans: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর সন্তানের নাম অনিতা বসু পাফ ।  

***নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম কোথায় হয় ? 
Ans: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম হয় উড়িষ্যার কটক শহরে ।  

***নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু কে ছিলেন ? 
Ans: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী ও নেতা ।  

***নেতাজী কী দল গঠন করেন ? 
Ans: নেতাজী ফরওয়ার্ড ব্লক দল গঠন করেন ।  

***নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর রাজনৈতিক দলের নাম কী ? 
Ans: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর রাজনৈতিক দলের নাম ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ।  

 Tag:  Netaji Subhash Chandra Bose, Netaji Subhash Chandra Bose Auto Biography in Bengali, Netaji Subhash Chandra Bose Bangla Biography, Netaji Subhash Chandra Bose Biography in Bengali, Netaji Subhash Chandra Bose Biography Bangla, Netaji Subhash Chandra Bose Biography Bengali, Netaji Subhash Chandra Bose Biography in Bangla, Netaji Subhash Chandra Bose Biography in Bengali, Netaji Subhash Chandra Bose History in Bengali, Netaji Subhash Chandra Bose in Bengali, Netaji Subhash Chandra Bose Jiboni, Netaji Subhash Chandra Bose Jivani, Netaji Subhash Chandra Bose Jivani in Bengali, Netaji Subhash Chandra Bose Life History in Bengali, Netaji Subhash Chandra Bose Life in Bengali, Netaji Subhash Chandra Bose Life Story in Bengali, Netaji Subhash Chandra Bose Story in Bengali, 
Tags

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.