Type Here to Get Search Results !

সুকান্ত ভট্টাচার্যের—৫টি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা সকলের জন্য।

সুকান্ত ভট্টাচার্যের—৫টি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা সকলের জন্য।

সুকান্ত ভট্টাচার্যের—৫টি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা সকলের জন্য।

সুকান্ত ভট্টাচার্যের—৫টি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা সকলের জন্য। সুকান্ত ভট্টাচার্যের ৫ টি গুরুত্ব পূর্ণ কবিতা। চিরদিনের। লেনিন, হে মহাজীবন, দেশলাইয়ের কাঠি, একটি মোরগের কাহিনী, এই ৫টি কবিতা খুবই ভালো সকলের ভালো লাগবে।

সুকান্ত ভট্টাচার্য জীবনী, এবং সুকান্ত ভট্টাচার্য ৫টি গুরুত্বপূর্ণ বিখ্যাত কবিতা (Sukanta Bhattacharya Kobita) সমূহ গুলো নিচে দেওয়া হলো। All the selected poems of sukanta bhattacharya in bengali are listed below.

সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)
উৎস: উইকিপিডিয়া
সুকান্ত ভট্টাচার্য ১৫ আগস্ট ১৯২৬ সালে কলিকাতার কালীঘাটের ৪৩, মহিম হালদার স্ট্রীটের মাতামহের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি প্রথম ম্যালেরিয়া ও পরে দুরারোগ্য ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়ে, ১৯৪৭ সালে ১৩ই মে মাত্র ২১ বছর বয়সে কলকাতার ১১৯ লাউডট স্ট্রীটের রেড এড কিওর হোমে মৃত্যুবরণ করেন।

প্রিয় ছাত্র ছাত্রী এবং বন্ধুরা সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করার জন্য। এবং আশা করি আমাদের এই ব্লগ পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। বন্ধুরা অবশ্যই আমাদের এই ব্লগ পোষ্ট টি শেয়ার করবেন এবং আমাদের এই ব্লক কে ফলো করবেন এবং কমেন্ট করে জানাবেন আর কোন লেখক-এর কবিতা পড়তে চান।আমরা অবশ্য তোমাদের পছন্দের কবিতা টি সংগ্রহ করে পোস্ট করার চেষ্টা করবো।

প্রিয় বন্ধুরা আজ আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ৫ টি গুরুত্ব পূর্ণ কবিতা। যে কবিতা গুলি আপনাদের খুবই ভালো লাগবে।   

সুকান্ত ভট্টাচার্যের—৫টি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা সকলের জন্য। 


চিরদিনের।
সুকান্ত ভট্টাচার্য

এখানে বৃষ্টিমুখর লাজুক গাঁয়ে
এসে থেমে গেছে ব্যস্ত ঘড়ির কাঁটা,
সবুজ মাঠেরা পথ দেয় পায়ে পায়ে
পথ নেই, তবু এখানে যে পথ হাঁটা।
জোড়া দিঘি, তার পাড়েতে তালের সারি
দূরে বাঁশঝাড়ে আত্মদানের সাড়া,
পচা জল আর মশায় অহংকারী
নীরব এখানে অমর কিষাণপাড়া।
এ গ্রামের পাশে মজা নদী বারো মাস
বর্ষায় আজ বিদ্রোহ বুঝি করে,
গোয়ালে পাঠায় ইশারা সবুজ ঘাস
এ গ্রাম নতুন সবুজ ঘাগরা পরে।
রাত্রি এখানে স্বাগত সান্ধ্য শাঁখে
কিষাণকে ঘরে পাঠায় যে আল-পথ;
বুড়ো বটতলা পরস্পরকে ডাকে
সন্ধ্যা সেখানে জড়ো করে জনমত।
দুর্ভিক্ষের আঁচল জড়ানো গায়ে
এ গ্রামের লোক আজো সব কাজ করে,
কৃষক-বধূরা ঢেঁকিকে নাচায় পায়ে
প্রতি সন্ধ্যায় দীপ জ্বলে ঘরে ঘরে।
রাত্রি হলেই দাওয়ার অন্ধকারে
ঠাকুমা গল্প শোনায় যে নাতনিকে,
কেমন করে সে আকালেতে গতবারে,
চলে গেল লোক দিশাহারা দিকে দিকে।
এখানে সকাল ঘোষিত পাখির গানে
কামার, কুমোর, তাঁতি তার কাজে জোটে,
সারাটা দুপুর ক্ষেতের চাষির কানে
একটানা আর বিচিত্র ধ্বনি ওঠে।
হঠাৎ সেদিন জল আনবার পথে
কৃষক-বধূ সে থমকে তাকায় পাশে,
ঘোমটা তুলে সে দেখে নেয় কোনোমতে,
সবুজ ফসলে সুবর্ণ যুগ আসে ৷ 
দুর্ভিক্ষের আঁচল জড়ানো গায়ে 
এ গ্রামের লোক আজো সব কাজ করে,
কৃষক-বধূরা ঢেঁকিকে নাচায় পায়ে
প্রতি সন্ধ্যায় দীপ জ্বলে ঘরে ঘরে।
রাত্রি হলেই দাওয়ার অন্ধকারে
ঠাকুমা গল্প শোনায় যে নাতনিকে,
কেমন করে সে আকালেতে গতবারে,
চলে গেল লোক দিশাহারা দিকে দিকে।
এখানে সকাল ঘোষিত পাখির গানে
কামার, কুমোর, তাঁতি তার কাজে জোটে,
সারাটা দুপুর ক্ষেতের চাষির কানে
একটানা আর বিচিত্র ধ্বনি ওঠে।
হঠাৎ সেদিন জল আনবার পথে
কৃষক-বধূ সে থমকে তাকায় পাশে,
ঘোমটা তুলে সে দেখে নেয় কোনোমতে,
সবুজ ফসলে সুবর্ণ যুগ আসে ৷

সুকান্ত ভট্টাচার্যের—৫টি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা সকলের জন্য। 

লেনিন।

 সুকান্ত ভট্টাচার্য

লেনিন ভেঙেছে রুশে জনস্রোতে অন্যায়ের বাঁধ,

অন্যায়ের মুখোমুখি লেনিন প্রথম প্রতিবাদ। 

আজকেও রুশিয়ার গ্রামে ও নগরে

হাজার লেনিন যুদ্ধ করে,

মুক্তির সীমান্ত ঘিরে বিস্তীর্ণ প্রান্তরে।

বিদ্যুৎ-ইশারা চোখে, আজকেও অযুত লেনিন

ক্রমশ সংক্ষিপ্ত করে বিশ্বব্যাপী প্রতীক্ষিত দিন,

বিপর্যস্ত ধনতন্ত্র, কণ্ঠরুদ্ধ, বুকে আর্তনাদ;

আসে শত্রুজয়ের সংবাদ।

সযত্ন মুখোশধরী ধনিকেরও বন্ধ আস্ফালন,

কাঁপে হৃতযন্ত্র তার, চোখে মুখে চিহ্নিত মরণ।

বিপ্লব হয়েছে শুরু, পদানত জনতার ব্যগ্র গাত্রোত্থানে,

দেশে দেশে বিস্ফোরণ অতর্কিতে অগ্ন্যুৎপাত হানে।

দিকে দিকে কোণে কোণে লেনিনের পদধ্বনি

আজো যায় শোনা,

দলিত হাজার কণ্ঠে বিপ্লবের আজো সম্বর্ধনা।

পৃথিবীর প্রতি ঘরে ঘরে,

লেনিন সমৃদ্ধ হয় সম্ভাবিত উর্বর জঠরে।

সুকান্ত ভট্টাচার্যের—৫টি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা সকলের জন্য। 

হে মহাজীবন।

সুকান্ত ভট্টাচাৰ্য্য

হে মহামানব, আর এ কাব্য নয়

এবার কঠিন কঠোর গদ্য আনো,

পদ-লালিত্য-ঝস্কার

মুছে যাক

গদ্যের কড়া ঘাতুড়িকে আজ হানো।

প্রয়োজন নেই কবিতার স্নিগ্ধতা-

কবিতা তোমায় দিলাম আজকে ছুটি,

ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়

পূর্ণিমা-চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।

সুকান্ত ভট্টাচার্যের—৫টি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা সকলের জন্য। 

দেশলাইয়ের কাঠি

সুকান্ত ভট্টাচাৰ্য্য

আমি একটা ছোট্ট দেশলাইয়ের কাঠি

এত নগণ্য, হয়তো চোখেও পড়ি না;

তবু জেনো

মুখে আমার উসখুস করছে বারুদ

বুকে আমার জ্বলে উঠবার দুরন্ত উচ্ছ্বাস;

আমি একটা দেশলাইয়ের কাঠি।

মনে আছে সেদিন হুলুস্থুল বেধেছিল?

ঘরের কোণে জ্বলে উঠেছিল আগুন-

আমাকে অবজ্ঞাভরে না-নিভিয়ে ছুঁড়ে ফেলায়!

কত ঘরকে দিয়েছি পুড়িয়ে,

কত প্রাসাদকে করেছি ধূলিসাৎ

আমি একাই- ছোট্ট একটা দেশলাইয়ের কাঠি।

এমনি বহু নগর, বহু রাজ্যকে দিতে পারি ছারখার করে

তবুও অবজ্ঞা করবে আমাদের?

মনে নেই? এই সেদিন-

আমরা সবাই জ্বলে উঠেছিলাম একই বাক্সে;

চমকে উঠেছিলে আমরা শুনেছিলাম

তোমাদের বিবর্ণ মুখের আর্তনাদ।

আমাদের কী অসীম শক্তি

তা তো অনুভব করেছো বারংবার;

তবু কেন বোঝো না,

আমরা বন্দী থাকবো না তোমাদের পকেটে পকেটে,

আমরা বেরিয়ে পড়ব, আমরা ছড়িয়ে পড়ব

শহরে, গঞ্জে, গ্রামে দিগন্ত থেকে দিগন্তে।

আমরা বার বার জ্বলি, নিতান্ত অবহেলায়-

তা তো তোমরা জানোই!

কিন্তু তোমরা তো জানো না:

কবে আমরা জ্বলে উঠব

সবাই শেষবারের মতো!

সুকান্ত ভট্টাচার্যের—৫টি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা সকলের জন্য। 

একটি মোরগের কাহিনী।

সুকান্ত ভট্টাচার্য

একটি মোরগ হঠাৎ আশ্রয় পেয়ে গেল

বিরাট প্রাসাদের ছোট্ট এক কোণে,

ভাঙা প্যাকিং বাক্সের গাদায় -

আরো দু'তিনটে মুরগীর সঙ্গে।

আশ্রয় যদিও মিলল,

উপযুক্ত আহার মিলল না।

সুতীক্ষ্ম চিৎকারে প্রতিবাদ জানিয়ে

গলা ফাটাল সেই মোরগ

ভোর থেকে সন্ধে পর্যন্ত -

তবুও সহানুভূতি জানাল না সেই বিরাট শক্ত ইমারত

তারপর শুরু হল তার আঁক্তাকুড়ে আনাগোনা।

আশ্চর্য ! সেখানে প্রতিদিন মিলতে লাগল

ফেলে দেওয়া ভাত-রুটির চমৎকার প্রচুর খাবার ।

তারপর এক সময় আঁস্তাকুড়েও এল অংশীদার -

ময়লা ছেঁড়া ন্যাকড়া পরা দু'তিনটে মানুষ ;

কাজেই দুর্বলতর মোরগের খাবার গেল বন্ধ হয়ে।

খাবার ! খাবার ! খানিকটা খাবার !

অসহায় মোরগ খাবারের সন্ধানে

বার বার চেষ্টা ক’রল প্রাসাদে ঢুকতে,

প্রত্যেকবারই তাড়া খেল প্রচণ্ড।

ছোট্ট মোরগ ঘাড় উঁচু করে স্বপ্ন দেখে।

প্রাসাদের ভেতর রাশি রাশি খাবার !

তারপর সত্যিই সে একদিন প্রাসাদে ঢুকতে পেল,

একেবারে সোজা চলে এল

ধপধপে দামী কাপড়ে ঢাকা খাবার টেবিলে ;

অবশ্য খাবার খেতে নয়

খাবার হিসেবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.