Type Here to Get Search Results !

NATO-কি?| এর গঠন ও শর্তাবলি এবং মূল্যায়ন| NATO Formation| NATO Full Informeton.

NATO-কি?| এর গঠন ও শর্তাবলি এবং মূল্যায়ন| NATO Formation| NATO Full Informeton.

NATO-কি?| এর গঠন ও শর্তাবলি এবং মূল্যায়ন| NATO Formation| NATO Full Informeton.

NATO ছিল একটি যৌথ সামরিক সংস্থা।এই সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে নিয়ে উত্তর আটলান্টিক পরিষদ (North Atlantic Council) গঠিত হয়। সামরিক নীতি সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে গঠন করা হয় প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা কমিটিবর্তমানে NATO 30টি দেশ নিয়ে সংগঠিত (Defence Planning Committee)।

Today Gk-All Exams-এর পক্ষ থেকে আপনাদের কে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদের এই ব্লগ পোস্টটি পড়ার জন্য। যদি আমাদের এই পোস্টটি আপনাদের ভালোলেগে থাকে তাহলে নিচে কমেন্টে  অবশ্য জানাবেন আর পাশের নীল-রংযের ঘণ্টাটি প্রেস করে আমাদের এই ব্লগ-ওয়েবসাইটটি অবশ্য   অবশ্য সাবস্ক্রাইব করবেন ধন্যবাদ।

👽 NATO-এর ভূমিকা| The Role of NATO:

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি হ্যারি টুম্যান সােভিয়েত রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এতদসত্ত্বেও মার্কিন সেনেট তাঁর এই ‘রুশ-ভীতি সম্পর্কে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত ছিল। কিন্তু রাশিয়া কর্তৃক বার্লিন অবরােধ ও তার পরবর্তী ঘটনার প্রেক্ষিতে মার্কিন সেনেটে টুম্যানের প্রস্তাব মতাে আমেরিকা ‘মনরাে নীতি’ ত্যাগ করে বাইরের দেশগুলির সঙ্গে সামরিক চুক্তি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই সিদ্ধান্তের ফলশ্রুতিই ছিল NATO বা উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা গঠন। এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক ক্ৰলি মন্তব্য করেছিল—NATO-তে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তির কারণ হল সাম্যবাদের জন্য আমেরিকানদের গভীর বিদ্বেষ। অধ্যাপক উইলিয়ম কেলর বলেছেন—The Atlantic alliance was forged not by a COMMON devotion to shared beliefs but rather by the sentiments of danger.

👽 NATO-এর গঠনের পটভূমি|NATO formation: 

১৯৪৮ সালের শুরু থেকেই ইউরােপের দেশগুলি দুটি আলাদা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। এর আগে ১৯৪৭ সালের টুম্যান নীতি ও মার্শাল পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে ঠাণ্ডা লড়াইয়ের পটভূমি সূচিত করেছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও সােভিয়েত রাশিয়া তাদের নেতৃত্বাধীন দুটি প্রভাবাধীন অঞলের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সামরিক জোট গঠনের জন্য অগ্রসর হয়। এই লক্ষ্যে সােভিয়েত রাশিয়া ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বরে গঠন করে ‘কমিনফর্ম। এই বছরের মার্চ মাসে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড।ডানকার্কের চুক্তি স্বাক্ষর করে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে। এরপর ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবার্গ, ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স এই ৫টি দেশ একত্রে ‘ব্রাসেলস্ চুক্তি স্বাক্ষর করে। 

এই চুক্তির শর্তানুযায়ী এই ৫টি দেশ ৫০ বছরের জন্য পারস্পরিক আত্মরক্ষা ও অর্থনৈতিক সহযােগিতা সুনিশ্চিত করতে চেয়েছিল। একই সময়ে মার্কিন রাষ্ট্রপতি টুম্যানও বাধ্যতামূলক সামরিক ব্যবস্থা প্রচলনের জন্য মার্কিন কংগ্রেসের অনুমতি প্রার্থনা করলেন। এভাবে এই দুটি ঘটনা দুইপক্ষকে কাছাকাছি নিয়ে এল। এছাড়া ব্রাসেলস চুক্তিভুক্ত দেশগুলির পক্ষে সােভিয়েত আগ্রাসন প্রতিহত করা সম্ভবপর ছিল না। এই চুক্তির মধ্যে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্ভুক্ত হলে পশ্চিমি শক্তিজোট আরও শক্তিশালী হবে বলে সকলেই মনে করেন। বার্লিন সংকট এই ধারণাকে আরও সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিল। এভাবেই NATO গঠনের পথ সুগম হয়েছিল।

👽 NATO-এর গঠন| Formation of NATO:

১৯৪৮ সালের জুন মাসে সােভিয়েত রাশিয়া বার্লিন অবরােধ করলে ইউরােপের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকান সেনেটে আর্থার ভ্যান্ডেনবার্গ একটি প্রস্তাব পেশ করেন যা ভ্যান্ডেনবার্গ প্রস্তাব’ নামে পরিচিত (১৯৪৮ সালের ১১ জুন)। এই প্রস্তাবে বলা হয় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র নিজ স্বার্থে Non-American শক্তির সঙ্গে যৌথ সামরিক চুক্তি সম্পাদন করতে পারবে।“মনরাে নীতি লঙ্ঘনকারী এই প্রস্তাব মার্কিন সেনেটে অনুমােদিত হওয়ায় NATO গঠনে আর কোনাে বাধা থাকল না। 

এরপর ১৯৪৯ সালের ৪ এপ্রিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২টি দেশ নিয়ে NATO বা North Atlantic Treaty Organization গঠিত হয়। (বর্তমানে NATO 30টি দেশ নিয়ে সংগঠিত) NATO-এর চুক্তিভুক্ত দেশগুলি হল—বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, আইসল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, ইটালি, ডেনমার্ক, নরওয়ে, পাের্তুগাল এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সেনেট ৮২-১৩ ভােটে এই চুক্তি অনুমােদন করে।১৯৫২ সালে গ্রিস ও তুরস্ক এবং ১৯৫৫ সালে পশ্চিম জার্মানি NATO-এর সদস্য হয়।


👽 NATO-এর শর্তাবলি| NATO Terms:

১৪টি শর্ত সমন্বিত NATO চুক্তিতে স্থির হয়—

(১) আন্তর্জাতিক বিবাদ-বিসংবাদের শান্তিপূর্ণ মীমাংসা করতে হবে। 

(২) চুক্তিবদ্ধ কোনাে দেশ বহিঃশত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হলে সকল সদস্য রাষ্ট্র যৌথভাবে এই আক্রমণ প্রতিহত করবে।

(৩) সদস্য রাষ্ট্রগুলি নিজেদের মধ্যে যে-কোনাে বিবাদ শান্তিপূর্ণ উপায়ে মীমাংসা করতে হবে। 

(৪) সদস্য রাষ্ট্রগুলি পরস্পরকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নতি করার চেষ্টা করবে। 

(৫) রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের ওপর আস্থা রেখে রাষ্ট্রপুঞ্জকে সহায়তা করবে। 

(৬) অন্য কোনাে রাষ্ট্রকে এই চুক্তিতে সামিল করতে বা অনুমােদন দিতে NATO-ভুক্ত দেশগুলির অধিকার থাকবে ইত্যাদি। প্রাথমিকভাবে এই চুক্তির কার্যকাল ২০ বছর ঠিক করা হলেও বর্তমানেও NATO চুক্তি সমানভাবেই কার্যকরী আছে।

👽 NATO-এর সাংগঠনিক বিন্যাস| The organizational structure of NATO:

NATO ছিল একটি যৌথ সামরিক সংস্থা। এই সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে নিয়ে উত্তর আটলান্টিক পরিষদ (North Atlantic Council) গঠিত হয়। সামরিক নীতি সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে গঠন করা হয় প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা কমিটি (Defence Planning Committee)। NATO-এর প্রশাসনিক কার্যাবলি পরিচালনার জন্য একটি সচিবালয় গঠন করা হয় যার প্রধান হল মহাসচিব। NATO-এর সদস্য দেশগুলির সেনাবাহিনীর প্রধানদের নিয়ে গঠিত হয় NATO-এর সামরিক কম্যান্ড যা আবার চার ভাগে বিভক্ত—ইউরােপীয় কম্যান্ড, সামুদ্রিক কম্যান্ড, উপকূল কম্যান্ড এবং কানাডা-আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র আঞ্চলিক পরিকল্পনা গােষ্ঠী। NATO-এর গৃহীত নীতি পরিচিত ছিল ‘অগ্রগামী  রণকৌশল’ (The Forward Strategy) নামে, যার মূলকথা ছিল সােভিয়েত রাশিয়াকে কোণঠাসা করে রেখে তার অগ্রগতিকে রুদ্ধ করা।

👽 NATO-এর সীমাবদ্ধতা|NATO's limitations:

(১) NATO বা উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা প্রাথমিকভাবে আটলান্টিক মহাসাগরের উভয় তীরের রাষ্ট্রগুলিকে নিয়ে গঠিত হলেও ইটালি, গ্রিস, তুরস্ক প্রভৃতি রাষ্ট্রগুলি এই ভৌগােলিক সীমানার বাইরে অবস্থিত ছিল। আবার আটলান্টিক তীরস্থ স্পেনকে এই সংস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অন্যদিক সুইডেন ও আয়ারল্যান্ড এই সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণে অস্বীকার করে।

(২) এই সংস্থার অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির মধ্যে আদর্শগত ও ঐতিহ্যগত কোনাে সংহতি ছিল না, ইটালি ও জার্মানির বিরুদ্ধে অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলি সবসময়ই সংগ্রামে লিপ্ত ছিল প্রকৃতপক্ষে NATO ছিল। একটি অবিমিশ্র নেতিবাচক সংগঠন, এরা কেবলমাত্র সম্ভাব্য সােভিয়েত আক্রমণের ভয়ে ভীত হয়েই একজোট হয়েছিল।

(৩) এই সংস্থার অন্যতম সীমাবদ্ধতা ছিল, এটি আকৃতিতে যৌথ হলেও প্রকৃতিতে ছিল একক। কারণ এর নীতি নির্ধারণ ও সামরিক-আর্থিক ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবেই ছিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর।

(৪) এটি একটি যৌথ সংস্থা হলেও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র সবসময়েই NATO-কে নিজ স্বার্থে ব্যবহার  করেছে। ইউরােপের বাইরে আমেরিকা NATO-এর স্বার্থে কোনাে যৌথ প্রতিরােধ নীতি গ্রহণ করেনি।

(৫) NATO সদস্য দেশগুলির মধ্যে মতানৈক্যও দেখা গিয়েছিল। জার্মানির সামরিকীকরণের ক্ষেত্রে  ফ্রান্সের সঙ্গে আমেরিকার মতবিরােধ দেখা যায় ; সুয়েজ সংকটে আমেরিকা ব্রিটেন ও ফ্রান্সের বিরােধিতা করেছিল।

⬄ NATO-এর মূল্যায়ন|NATO Assessment:

উপরােক্ত কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও NATO চুক্তির গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ঠাণ্ডা লড়াইয়ের ক্ষেত্রে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র অনেকটাই অগ্রগামী হয়েছিল। এই চুক্তিরফলে ইউরােপে সােভিয়েত আগ্রাসন অনেকটাই বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল। সদস্য রাষ্ট্রগুলির অর্থনৈতিক উন্নতিও বহুলাংশে এই চুক্তির মাধ্যমে সাধিত হয়েছিল। আবার এই চুক্তিতে বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কথা বলা হলেও NATO চুক্তির প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল সােভিয়েত আগ্রাসন প্রতিরােধ করা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত শক্তিজোটের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করা। 

এর ফলে বিশ্বের দুই শক্তিজোটের মধ্যে তিক্ততা বৃদ্ধি পায় যা বিশ্বশান্তির পরিপন্থী হয়ে ওঠে। NATO চুক্তির প্রতিক্রিয়াস্বরূপ সােভিয়েত রাশিয়া তার মিত্র রাষ্ট্রগুলি নিয়ে গড়ে তােলে ‘ওয়ারশ চুক্তি’সংস্থা। আবার এই চুক্তি রাষ্ট্রপুঞ্জের মর্যাদাহানি ঘটিয়েছিল। এই চুক্তির শর্তাবলি রাষ্ট্রপুঞ্জের ক্ষমতা ও দক্ষতার ওপর প্রশ্নচিহ্ন ঝুলিয়ে দিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবে এই আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রভাব হ্রাস পেয়েছিল।

Today Gk-All Exams-এর পক্ষ থেকে আপনাদের কে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদের এই ব্লগ পোস্টটি পড়ার জন্য। যদি আমাদের এই পোস্টটি আপনাদের ভালোলেগে থাকে তাহলে নিচে কমেন্টে  অবশ্য জানাবেন আর পাশের নীল-রংযের ঘণ্টাটি প্রেস করে আমাদের এই ব্লগ-ওয়েবসাইটটি অবশ্য  অবশ্য সাবস্ক্রাইব করবেন ধন্যবাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.