শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনী| Sarat Chandra Chattopadhyay Biography in Bengali.
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। জন্ম:১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর। ছদ্দনাম: অনিলা দেবী। পিতার নাম ছিল মতিলাল চট্টোপাধ্যায় এবং মাতা ভুবনমােহিনী দেবী। ছদ্দনাম: অনিলা দেবী
The topic of our discussion today is the biography of Sarat Chandra Chattopadhyay. Sarat Chandra Chattopadhyay Childhood, Family, Career, Personal Life, Beginning of Literary Studies, Honors, Opinions of Gunijan. Hope you all enjoy this post.
প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা: আজ আমাদের আলোচনার বিষয় হলো শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শৈশব, পরিবার, কর্মজীবন,ব্যক্তিজীবন, সাহিত্যচর্চার সূত্রপাত,সন্মাননা,গুনীজনের মতামত নিয়ে। আশাকরি এইপোস্টটি তোমাদেরসকলের ভালো লাগবে। যদি আমাদের এই পোস্টটি তোমার পছন্দ হয়ে থাকে তাহোলে অবশ্য আমাদের এইপোস্টটি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের কাছে শেয়ার করবেন। ভালো থেকো সুস্থ্য থেকো খুশিতে থাকো ধ্যন্যবাদ।
Sarat Chandra Chattopadhyay Biography in Bengali.
নাম (Name) | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়|Sarat Chandra Chattopadhyay |
জন্ম (Birthday) | ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর (১২ ৮৩ বঙ্গাব্দের ৩১ ভাদ্র) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম হয়। |
জন্মস্থান (BirthPlace) | হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে| |
ছদ্দনাম (Pseudonym) | অনিলা দেবী| |
অভিভাবক (Guardian) / পিতা ও মাতা (Father and Mother) | পিতার নাম ছিল মতিলাল চট্টোপাধ্যায় এবং মাতা ভুবনমােহিনী দেবী। |
দাম্পত্যসঙ্গী (Spouse) | স্ত্রী শান্তি দেবী |
পেশা (Career) | কবি, নাট্যকার,। |
বিশিষ্ট রচনাগুলি: | ‘পরিণীতা (১৯১৪), ‘বিরাজবৌ (১৯১৪), মেজদিদি। (১৯১৫), বৈকুণ্ঠের উইল’ (১৯১৫), ‘পল্লীসমাজ’ (১৯১৬), |
মৃত্যু (Death) | ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের ১৬ জানুয়ারি (১৩৪৪ বঙ্গাব্দের ২ মাঘ) বেলা দশটার সময় ৬১ বছর বয়সে তিনি লােকান্তরিত হন। |
মৃত্যুস্থান: | কলকাতা, |
Sarat Chandra Chattopadhyay Date of Birth, Childhood, Family, Career, Personal Life, Beginning of Literary Studies, Honors, Opinions of Gunijan.
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ও বাল্যজীবন:
হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর (১২ ৮৩ বঙ্গাব্দের ৩১ ভাদ্র) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম হয়। তাঁর পিতার নাম ছিল মতিলাল চট্টোপাধ্যায় এবং মাতা ভুবনমােহিনী দেবী। শৈশবে তাঁর মাথায় চুল না থাকায় তাঁকে ন্যাড়া’ নামে ডাকা হত। শরৎচন্দ্রের শৈশব ও কৈশােরের মাত্র কয়েকটি বছর দেবানন্দপুরে অতিবাহিত হয়। ছেলেবেলায় তিনি খুব দুরন্ত ছিলেন। পিতার আয় তেমন না থাকায় কিছু সময় আর্থিক সমস্যায় ও কষ্টে তাঁর জীবন কাটে। কিন্তু ভাগলপুরে বসবাসকারী মামারা সম্পন্ন পরিবার হওয়ায় অল্প বয়সে তিনি ভাগলপুরে চলে যান এবং সেখানকার এইচই স্কুলের এনট্রান্স ক্লাসে ভরতি হন।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শিক্ষাজীবন|Educational life of Sarat Chandra Chattopadhyay.
শরৎচন্দ্র ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করার পর কিছুদিন বিহারের পাটনা কলেজে পড়াশােনা করেন। পাটনা কলেজে পড়ার সময় তিনি একটি মেসে থাকতেন। সেসময় ছাত্রবৃত্তি পরীক্ষায় পাস করা খুব কঠিন ছিল, কিন্তু তিনি সব বাধা অতিক্রম করে সেই পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে পাস করেন। বছরের শেষে তিনি ক্লাসে প্রথম হয়ে ডবল প্রমােশন লাভ করেন। ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে তাঁর প্রতিষ্ঠানগত দিক থেকে শিক্ষালাভের প্রয়াস সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কর্মজীবন|Career of Sarat Chandra Chattopadhyay.
১৯০১ খ্রিস্টাব্দের শেষে শরৎচন্দ্র কাউকে না জানিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে পিতৃবি-য়ােগের পর মজফফরপুর থেকে তিনি ভাগলপুরে ফেরেন এবং খুব আর্থিক সমস্যার মধ্যেদিয়ে পিতৃশ্রাদ্ধ সম্পন্ন করেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে তিনি জীবিকার সন্ধানে রেঙ্গুনে চলে যান। যাওয়ার আগে ‘কুন্তলীন’ নামে এক তেল কোম্পানির আয়ােজিত গল্প প্রতিযােগিতায় ‘মন্দির’ নামে একটি গল্প লিখে পাঠান এবং গল্পটি পুরস্কার লাভ করে। এটি ছাপার হরফে তাঁর লেখা প্রথম গল্প ।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ব্যক্তিজীবন|Personal life of Sarat Chandra Chattopadhyay.
রেঙ্গনে পৌছে তিনি মেসােমশাই অঘােরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে ওঠেন অবশ্য দু-বছর বাদেই কলকাতায় ফিরে যান। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের মার্চ পর্যন্ত তাঁকে বেকার থাকতে হয়। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে তিনি কর্মে নিযুক্ত হন। এবং পরপর তার বেতন বৃদ্ধি পায়। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে তিনি। নব্বই টাকা মাইনে এবং দশ টাকা ভাতা পেতেন। অফিসের ঊর্ধ্বতন সাহেব কর্মচারীদের সঙ্গে প্রায় বিরােধ বাধলেও সাধারণ সহকর্মীদের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক ছিল মধুর।
ব্রহ্লাদেশে তাঁর জীবনযাত্রা ছিল নীতিনিয়মহীন, উচ্ছঙ্খল ও কলুষপূর্ণ রেঙ্গুনে থাকাকালীন শরৎচন্দ্র বাঙালি ব্রাত্মণকনা শান্তিদেবীকে বিবাহ করেন। তাঁদের এক পুত্রসন্তানও জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু দুভার্গ্যবশত ভয়াবহ প্লেগের আক্রমণে স্ত্রী ও পুত্র আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে মারা যায় পরে ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা হিরন্ময়ীকে তিনি বিবাহ করেন।
শরৎচন্দ্র বাংলার রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন; এমনকি হাওড়া জেলা কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্বও গ্রহণ করেন। কিন্তু তৎকালীন স্বার্থপর, অমানবিক রাজনীতির প্রতি বিরক্ত হয়ে তিনি একসময় সেই পদ ত্যাগ করেন।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যচর্চার সূত্রপাত|The beginning of the literary practice of Sarat Chandra Chattopadhyay.
শরৎচন্দ্র রবীন্দ্র-সমসাময়িক যুগের লেখক ছিলেন তিনি উত্তরাধিকারসূত্রে পিতার কাছ থেকে সাহিত্যানুরাগ পেয়েছিলেন অস্থিরচিত্ত ভবঘুরে মানুষটি পরিণত বয়সে
নিজের সম্পর্কে বলেছেন—“পিতার নিকট হতে অস্থির স্বভাব ও গভীর সাহিত্যানুরাগ ব্যতীত আমি উত্তরাধিকারসূত্রে আর কিছুই পাইনি।” ভাগলপুরে থাকার সময় তাঁর সাহিত্যচর্চার জীবন শুরু হয়। কিন্তু সেসব রচনার কথা জানা যায় না এবং সেগুলি কোথাও ছাপাও হয়নি। দুর্জয় জেদ ও বেপরােয়া স্বভাব সত্ত্বেও তাঁর মন ছিল ভীষণ সংবেদনশীল ও কোমল প্রকৃতির অসাধারণ একাগ্রতা থাকায় তাঁর স্মৃতিও ছিল প্রখর। দেবানন্দপুরে থাকার সময়ে তিনি যাত্রা, থিয়েটার ও গানের প্রতি আকৃষ্ট হন। পরে ছবি আঁকার ব্যাপারেও উৎসাহিত হন। প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করার পর শরৎচন্দ্রের গানবাজনার প্রতি গভীর আগ্রহ জন্মায়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যসৃষ্টি| Literary creation of Sarat Chandra Chattopadhyay.
১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে মন্দির’ গল্প বেনামে ‘কুন্তলীন। পুরস্কার পায়। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে ‘বড়দিদি’ ভারতী পত্রিকায়। ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের পর ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে বই আকারে। প্রকাশিত হয়। তাঁর জীবৎকালের শেষ রচনা ‘বিপ্রদাস। ১৯৩৫-এ প্রকাশিত হয় বাইশ বছরে তিনি মােট তিরিশটি। উপন্যাস এবং সমসংখ্যক গল্প লেখেন মৃত্যুর পর প্রকাশ পায় ‘শুভদা’ এবং শেষের পরিচয়।
তাঁর বিশিষ্ট রচনাগুলি হল— ‘পরিণীতা (১৯১৪), ‘বিরাজবৌ (১৯১৪), মেজদিদি। (১৯১৫), বৈকুণ্ঠের উইল’ (১৯১৫), ‘পল্লীসমাজ’ (১৯১৬), ‘অরক্ষণীয়া’ (১৯১৬), পণ্ডিতমশাই’ (১৯১৭), ‘দেবদাস’ (১৯১৭), চরিত্রহীন’ (১৯১৭), শ্রীকান্ত (চার খণ্ড), ‘গৃহদাহ’ (১৯২০), “দেনাপাওনা’ (১৯২৩), পথের দাবী।
উপন্যাসের নাট্যরূপও দিয়েছিলেন, সেগুলি হল—“যােড়শী’, (১৯২৬), ‘শেষ প্রশ্ন’ (১৯৩১) ইত্যাদি। তিনি কয়েকটি। ‘মা’ (১৯২৮), “বিরাজবৌ (১৯৩৪), “বিজয়া’ (১৯৩৫)।
এছাড়া দু-খানা প্রবন্ধগ্রন্থ লেখেন- ‘তরুণের বিদ্রোহ (১৯১৯), স্বদেশ ও সাহিত্য (১৯৩২)। এ ছাড়া নারীর মূল্য’ গ্রন্থটি তাঁর দিদি অনিলা দেবীর নামে প্রকাশিত হয়। তাঁর লেখা কিছু বিশিষ্ট ছােটোগল্প হল- “রামের সুমতি', ‘মহেশ’, ‘অভাগীর স্বর্গ', 'একাদশী বৈরাগী’, ‘অনুরাধা’, ‘সতী’,‘পরেশ’ ইত্যাদি। গল্প ও উপন্যাসে সমকালের সমাজ, সামন্ততন্ত্রের অহংকার ও অত্যাচার, জীর্ণ সংকীর্ণতা, নারীর ত্যাগ, একান্নবর্তী পরিবারের ভাঙন ও স্নেহ-বাৎসল্যের সার্থক সমন্বয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যে অমর কথাশিল্পী হিসেবে স্বীকৃত রবীন্দ্রপ্রতিভার দীপ্তিতেও তিনি চির-অম্লান।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সন্মাননা|Honors of Sarat Chandra Chattopadhyay.
শরৎচন্দ্র ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘জগত্তারিণী সুবর্ণপদক পান। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডিলিট উপাধি প্রদান করে সম্মান জানায়। তবুও এসবের উর্ধ্বে তিনি বাংলার ও বাংলার বাইরের মানুষের গভীর শ্রদ্ধা লাভ করেছেন, যা তাঁকে অমরত্বেরআসনে উপনীত করেছে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষজীবন|The last life of Sarat Chandra Chattopadhyay.
শরৎচন্দ্র অন্ত্রের দুরারােগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকদের যথাসাধ্য চেষ্টাকে ব্যর্থ করে ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের ১৬ জানুয়ারি (১৩৪৪ বঙ্গাব্দের ২ মাঘ) বেলা দশটার সময় ৬১ বছর বয়সে তিনি লােকান্তরিত হন। রবীন্দ্রনাথ অনুজপ্রতিম শরৎচন্দ্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে লেখেন—
যাহার অমর স্থান প্রেমের আসনে,
ক্ষতি তার ক্ষতি নয় মৃত্যুর শাসনে।
দেশের মৃত্তিকা থেকে নিল যারে হরি
দেশের হৃদয় তারে রাখিয়াছে ধরি।
গুনীজনের মতামত আরােপ করতে হবে।
শরৎচন্দ্রের সাহিত্যবিচারে তাঁর বাস্তব জীবনবােধ, সত্যোপলদ্ধি, মানবিক সহানুভূতি সবকিছু আলােচনা করেও তাঁর সুনিপুণ শিল্পকর্মের ওপরেই সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব —ড. অজিত ঘােষ শরৎচন্দ্র সাহিত্যকে বন্ধনহীন করতে চেয়েছেন, তিনি দৈনন্দিন ঘটনাকে চরম সত্য বলে গ্রহণ করেননি।
—শ্রীসুবােধকুমার সেনগুপ্ত
Questions and answers:
প্রঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কবে জন্মগ্রহণ করেন?
উঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭৬ সালে ১৫ ই সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।
প্রঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হুগলী জেলায় দেবানন্দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মায়ের নাম কি?
উঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মায়ের নাম ভুবনমোহিনী দেবী।
প্রঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাবার নাম কি?
উঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাবার নাম মতিলাল চট্টোপাধ্যায়।
প্রঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু দিবস কি?
উঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৯৩৮ সালে ১৬ জানুয়ারি মারা যান।
If you have any doubts or questions, please let me know.... যদি আপনার কোনও সন্দেহ বা প্রশ্ন থাকে তবে দয়া করে আমাকে জানান.....